amadermuktokantho
চট্টগ্রামরবিবার , ৪ জুন ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আমার বাবা জেলে বসেই ডিআইটি পুকুর খাওয়ার পরিকল্পনা করেন

এম রাসেল সরকার::
জুন ৪, ২০২৩ ১১:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার ডিআইটি পুকুর ভরাট ও দখল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলছে নানান মহলে।বৃহস্পতিবার (১ জুন) এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুক্রবার (২ জুন) পুকুরটি রক্ষার দাবিতে সেখানে মানববন্ধনের ডাক দেয় এলাকাবাসী। কিন্তু পুলিশের বাধায় হয়নি সেই মানববন্ধন। তবে ঠিকই পুকুড়পাড়ে শোডাউন দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাহানা আক্তারের লোকজন।

এ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মধ্যে এবার ফেসবুক লাইভে এলেন কাউন্সিলরের ভাই ড. মোহাম্মদ জাবিন। লাইভে তিনি দাবি করেছেন, এই পুকুরটি দখল করতে তার বাবা সাবেক কমিশনার সাইদুল ইসলাম (শহিদ চেয়ারম্যান) ২০০৬ সালেই পরিকল্পনা করে আসছিলেন।

শনিবার (৩ জুন) রাতে লাইভে এসে পুকুরসহ এলাকায় সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন ভূমি দখলে তার বাবার নানান কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন। পুকুর ভরাটের বিপক্ষে আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতাও প্রকাশ করেন ড. জাবিন। জানা গেছে, ড. মোহাম্মদ জাবিন বর্তমানে সুইডেনের ব্র্যাডফড বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি লিনিয়াস ইউনিভার্সিটির একজন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষক এবং যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সেলর ইউনিভার্সিটির বিভাগীয় সদস্য। তিনি ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাইদুল ইসলামের (শহিদ চেয়ারম্যান) দ্বিতীয় স্ত্রীর বড় সন্তান।

নিজেকে শহিদ চেয়ারম্যানের দুর্ভাগ্যবসত সন্তান দাবি করে ফেসবুকে প্রকাশ করা ১৬ মিনিট ২৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে ড. জাবিন বলেন, ‘আল্লাহর কসম করে আমি জাবিন সাক্ষী দিচ্ছি, ২০০৬ বা ২০০৭ সালের কথা, বিএনপির আমলে তিনি যখন জেলে ছিলেন আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। তখন আমার সামনে এই পুকুর খাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। আমার সামনে কোনো এক কাকাকে (আমি নাম নিচ্ছি না) নির্দেশনা দেয় এলাকায় যেসব নতুন বাড়ি হচ্ছে সেগুলোর পাইলিংয়ের সব ময়লা যেন এনে এই পুকুরে ফেলে। এই পুকুরটা যে কি ছিল আমরা এলাকায় যারা বড় হয়েছি তারা জানি। এখন তার কিছুই নেই, ভরাট হয়ে গেছে, পুকুরে পানিও নেই। এটা অনেক গভীর ছিল পাইলিংয়ের মাটি ফেলে পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। নাসির কাকা ছিলেন কলাগাছ কমিশনার তিনি কোনো কথা বলতে পারতেন না। তাকে সামনে রেখে রমজান, মাহবুবদের দিয়ে ময়লা ফেলে পুকুরটি ভরেছেন শহিদ চেয়ারম্যান।’

শহিদ চেয়ারম্যান রাতের অন্ধকারে গাছ কেটে পুকুরটি ভরাট করেছেন। আগে এই পুকুরের পাড়ে অনেক গাছ ছিল। সেগুলো কেটে কোনায় কোনায় মাটি ফেলে ভরাট করেছে বলেও জানান জাবিন।

পুকুর রক্ষার আন্দোলনকে যেন কোনোভাবে রাজনৈতিক আন্দোলনে তকমা দিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে এলাকাবাসীকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই আন্দোলন আপনারা চালিয়ে যান। আমিও আপনাদের সাথে আছি। পুকুরটি অবশ্যই বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এই আন্দোলন অব্যাহত থাকলে এই পুকুর তিনি খেতে পারবেন না। বেশি বাড়াবাড়ি করলে উল্টো তিনি নিজে নাই হয়ে যাবেন।

শুক্রবার সকালে পুলিশের নিষেধে মানববন্ধ না হলেও গণমাধ্যমগুলো চলে যাওয়ার পর হামলা হয় মানববন্ধনের অন্যতম আয়োজক মোহাম্মদ বাদশার ওপর। এ বিষয়ে শহিদ চেয়ারম্যানের ছেলে জাবিন বলেন, বাদশা অনেক বড় সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি বাদশাকে স্বাগত জানাই। এমন সাহস আরও বড় বড় কেউও দেখাতে পারেনি। আমি জানি বাদশা অহংকারী ছেলে, তবুও আমি এখন তার পক্ষে। বাদশাকে শহিদের লোকজন মারধর করেছে। আমি নিজের হালাল রুজি থেকে বাদশার জন্য ৫০ হাজার টাকা পাঠাবো।

জনগণকে পুকুর রক্ষার আন্দোলন করতে অনুমতি না দেওয়ায় পুলিশের সমালোচনা করে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘ওসি সাহেব আপনি জনগণকে অনুমতি দেয়নি। অথচ শহিদের লোকজন যখন মিছিল করছিল আপনি তাদের সুরক্ষা দিচ্ছিলেন। এখানে স্পষ্ঠ বুঝা যায় আপনার সাপোর্টিং ছিল। দেখেন মাসিক চাঁদা কোথায় কত যায়, তারপর বিশেষ কাজের জন্য মোটা অংকের কত টাকা এটা বাংলাদেশে নতুন কিছু না। এটা সবাই জানে। আইনের বাইরে কেউ না। ব্যবস্থা যে কারো বিরুদ্ধে নেওয়া হবে না সেটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। আমি আপনাকে অনুরোথ করবো জনগণের কাতারে আসুন। তাদের সুযোগ সুবিধা দেখুন। সত্যের পথে আসুন। পরিবেশবিরোধী কার্যাকালাপ রোধে আপনি এগিয়ে আসুন।’

কাউন্সিলর সাহানা আক্তারকে কলাগাছ হিসেবে রেখে তার ক্ষমতা ব্যবহার করে শহিদ যা, তা করছে বলে দাবি করেন জাবিন। এই পুকুরপাড়ে মাদক ব্যবসাসহ আরও অনেক কার্যক্রম চলে বলে জানিয়ে পুলিশ ও গণমাধ্যমকর্মীদের সেটি উদঘাটন করারও অনুরোধ জানান অভিযুক্ত শহিদ চেয়ারম্যানের ছেলে সুইডেনে অবস্থানরত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ জেবিন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।