amadermuktokantho
চট্টগ্রামসোমবার , ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ সবখবর

উদ্ধারকাজে প্রশংসা পেয়েছে নোবিপ্রবির আতিকা ও ইন্নার টিম

নিজস্ব প্রতিবেদক
সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪ ৬:১৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বৃহত্তর নোয়াখালীতে যখন ক্রমান্বয়ে বন্যার পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে তখন নোবিপ্রবির স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো সিদ্ধান্তে আসে অত্র এলাকার বন্যার্তদের নিয়ে কাজ শুরু করার। নোবিপ্রবির সর্বস্তরের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই কাজে অংশ নেয়। উদ্ধারকাজে সফল এমন দুটি টিম নিয়ে জানাচ্ছেন- সিফাত রাব্বানী।

বিগত ২৪ আগস্ট নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর “বন্যার্তদের পাশে নোবিপ্রবিয়ান” টিম এর পক্ষ হতে নোয়াখালীর সেনবাগ এরিয়ায় মূলত রেস্কিউ এবং অল্প কিছু ত্রান সামগ্রী নিয়ে বের হোন আতিকা ইফফাত (পরিসংখ্যান ১ম বর্ষ), আরাফাত অয়ন (অর্থনীতি ৪র্থ বর্ষ), তন্ময় সেন (ডিবিএ ৪র্থ বর্ষ),নাজিফা ইয়াসমিন (ইনফরমেশন সাইন্স এন্ড লাইব্রেরী ম্যানেজমেন্ট ৪র্থ বর্ষ), মোঃ মাহ্দী ইমতিয়াজ নাফিস (পদার্থবিজ্ঞান ২য় বর্ষ), রবিউল আউয়াল (পদার্থবিজ্ঞান ২য় বর্ষ), আরহাব মাহমুদ শাওকি(পদার্থবিজ্ঞান ২য় বর্ষ), নাসরিন জাহান নিঝুম (সমুদ্রবিজ্ঞান ২য় বর্ষ),সাজ্জাদ (এম আই এস ৩য় বর্ষ) সহ আরো কয়েকজন।

ঐদিন তারা আশেপাশে বন্যায় আটকা থাকা অনেক লোককেই নিরাপদ স্থানে পৌছাতে সাহায্য করেন, তার মধ্যে ছিলো গর্ভবতী মহিলা, অসুস্থ বৃদ্ধ মহিলা, শিশু এবং সদ্য প্রবাস থেকে আসা ৩ জন রেমিটেন্স যোদ্ধা।

সন্ধ্যা ৭ টায় তারা খবর পান যে সিলোনিয়া বাজার থেকে আরো সামনে মানিকপুরে একটি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে, এবং সে পরিবারে সদ্য জন্ম নেওয়া ৩ দিন বয়সী একটি শিশু এবং তার মা রয়েছে।

কালক্ষেপণ না করেই তাদের টিম বেরিয়ে পড়ে সে পরিবারকে উদ্ধার করতে, প্রায় ৩ ঘন্টা পানি পেরিয়ে তারা গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হোন । তারপর আতিকা ও তার টিম মিলে পানিবন্দি সে পরিবারকে উদ্ধার করতে সক্ষম হোন এবং তাদের কে সিলোনিয়া বাজার এ একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছে দেন। তারা ক্যাম্পাস এর উদ্দেশ্যে ফিরে আসার সময় আমরা আরেকটি ৮ মাস এর বাচ্চা এবং তার পরিবার কে ছমিরমুন্সী বাজার পৌছাতে সাহায্য করেন, সেখান থেকে তারা তাদের নিকট আত্নীয়র কাছে চলে যান।

উম্মে হাবিবা ইন্না, ছোটবেলা থেকেই রোভার স্কাউটিং এর সাথে যুক্ত। তিনি সহ আরো কয়েকজন সদস্য নিয়ে আরো একটি টিম গঠন হয়। এই টিমটিও মুলত উদ্ধারকাজ আর ত্রাণ বিতরণের কাজ করেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যেখানে অন্য টিমগুলো পৌঁছাতে পারেনি।

টিমে ছিলেন নাহিদ পারভেজ (শিক্ষা প্রশাসন, ২য় বর্ষ) ইমতিয়াজ মিঠু (শিক্ষা প্রশাসন, ৩য় বর্ষ), সোহান চৌধুরী (শিক্ষা প্রশাসন, ৩য় বর্ষ), আমিনুল ইসলাম (শিক্ষা, ৪র্থ বর্ষ), এনামুল করিম (শিক্ষা, ৪র্থ বর্ষ), মেহেরাব মাসাবিহ (আইন, ৪র্থ বর্ষ), ইন্না (অনুজীব বিজ্ঞান, ২য় বর্ষ), মেহেজাবীন ( সমাজকর্ম, ২য় বর্ষ), প্রান্ত (শিক্ষা প্রশাসন, ১ম বর্ষ), তাজবিউল (শিক্ষা, ১ম বর্ষ), তায়েফ (তথ্য প্রযুক্তি, ২য় বর্ষ)

তারা অধিকাংশ কাজ করেছেন সেনবাগ, সোনাইমুড়ী আর দাগনভুইঁয়ার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে। উদ্ধার আর ত্রান বিতরণের জন্য ট্রাক্টর আর বোট ব্যবহার করেছেন। কারণ, ট্রাক্টর অন্যান্য গাড়িগুলোর চেয়ে বেশি দুর্গম জায়গায় চালাচল করতে সক্ষম। যেই জায়াগা অব্দি ট্রাক্টরে যাওয়া সম্ভব, সে অব্দি ট্রাক্টর এ গিয়ে বাকি রাস্তা বোট এ করে যান তারা।

এই কাজ এ তাদের বেশ কিছু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। বড় প্রতিবন্ধকরা হলো অচেনা গ্রামগুলোর মধ্যে কোনটা রাস্তা, কোথায় পুকুর, কোথায় খাল এগুলো না জানার কারণে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। একটানা বৃষ্টিতে ভিজে পানির মধ্যে কাজ করার কারণে বেশিরভাগ সদস্য বিভিন্ন রোগবালাই-এ আক্রান্ত হয়েছে এবং বেশ কয়েকবার ঝড়ের কবলেও পড়তে হয়েছে।

তাদের কাজে প্রতিনিয়তই সাহসিকতার পরিচয় দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে । কারণ তাদের টার্গেট এরিয়াগুলো অনেক দুর্গম ছিল। তাদের কাজ এর মধ্যে এখন অব্দি সবচেয়ে বেশি মনে রাখার মতো ঘটানাটি ঘটেছে বন্যা ভয়াবহ হওয়ার ৩য় দিনে। প্রত্যন্ত এক গ্রামে উদ্ধারকাজ করতে গিয়ে এক বয়স্ক মহিলা তাদের টিমকে দেখে আবেগী হয়ে কান্নাকাটি করা শুরু করে দিয়েছিলেন। ৩ দিন ধরে সে তার ৩-৪ দিন আগে সিজার করা মেয়ে আর ছোট বাচ্চা সহ পানিবন্দি হয়েছিলো এবং সেখানে কোনো রেসকিউ টিম পৌঁছাতে পারেনি। তাদের দেখে ওনারা অনেক বেশি খুশি হয়েছিলেন। যা এখনো তাদের চোখের সামনে ভাসে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।