পিপিপি বা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিটার তাদের প্রচার প্রচারনা করলেও আদেও কী তার সুফল পাই নিটারের শিক্ষার্থীরা? বা পিপিপি আসলে কী?
সাভারের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ তথা নিটার বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের অধীনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন দ্বারা পরিচালিত একটি প্রকৌশল শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের, বাংলাদেশ সরকার কতৃক নিয়ন্ত্রিত। অন্যদিকে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন একটি ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। এ দু-প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রনে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নিটার। কালের বিবর্তনে ১৩ টি ব্যাচের পর ১৪তম ব্যাচ আসতে চলেছে চলতি মাসে।
নিটারে একজন শিক্ষার্থীকে তার স্নাতক শেষ করতে প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ্য টাকা খরচ করতে হয়। কিন্তু দিনশেষে বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক সুযোগ সুবিধা কী আগেও তারা পায়?
পাব্লিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সরকারি অনুদান পাবার কথা নিটারের কারন যেহেতু এটি পাবলিক উতৎপাদনকল্প প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সরেজমিনে তার ছিটেফোঁটা দেখা যায় না। তাহলে আদেও কী সরকারি সুবিধা পাই নিটার? না পেলে পাব্লিক ট্যাগ কেন ব্যাবহার হবে?
অন্যদিকে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় খরচ করতে হয়। হোস্টেলে থাকার ক্ষেত্রে মাসিক পাঁচশত পঞ্চাশ (৫৫০) টাকা দিতে হয়। কিন্তু তার বদলে এক রুমে আটজন (৮) গাদাগাদি করে থাকতে হয়। যা অস্বাস্থ্যকর এবং অনেকক্ষেত্রে শারিরীক সমস্যার কারণ।
এদিকে সাবেক চেয়ারম্যান সবসময় বলে এসেছে নিটারের কোন গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থী বেকার নেই। বিটিএমএ তাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দিবে। কিন্তু তার উল্লেখযোগ্য নজির নেই। এক্ষেত্রে শুধু প্রচারনার জন্য কী পিপিপি?
এবার আসি ক্যান্টিন সুবিধা নিয়ে। প্রতিটি সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যন্টিনের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কিছু ভূর্তকী দিয়ে থাকে। যার ফলে সুলভ মূল্যে খাবার খেতে পারে। কারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন অধিক। কিন্তু নিটারের শিক্ষার্থীরা সে সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। তাদের দাবি ছিলো তারা পর্যাপ্ত টাকা দিয়ে হলেও পুষ্টিকর ভালো খাবার যেন পাই। কিন্তু সেদিকেও নিটার প্রশাসন উদাসীন। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন তো ক্যাম্পাস ক্যান্টিন বন্ধ থাকেই, আবাফ যেদিন গুলো খোলা থাকে সেদিন গুলোতে ভালো খাবারের অভাব।
যেহেতু নিটার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রতিষ্ঠান। সেহেতু এখানে সরকারি সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি শিক্ষা-কার্যক্রম আরো বেশি শক্তিশালী হওয়া উচিত। এদিকেও গড়িমসি লক্ষ্য করা যায়। নিজেদের অপারগতা ঢাকার জন্য গেস্ট টিচারে ছয়লাপ। নিটারে এক্সপেরিয়েন্সড শিক্ষকের অভাব যথেষ্ট লক্ষ্যনীয়। যারাও আসে অল্পকিছুদিন পর চলে যায়। এতে শিক্ষার্থীদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট এ ঘাটতি থেকে যায়। অন্যদিকে আছে শ্রেনীসংখ্যার সংকট।
এবার আসি ঢাবি উৎপাদনকল্প প্রতিষ্ঠান হয়ার পরও অনেক ক্ষেত্রেই নিটার সুবিধাবঞ্চিত। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠতেই পারে পিপিপি হওয়ার কারণে এক্সট্রা কোন সুবিধা পায় নিটারিয়ানরা? এমন হাজারটা সমস্যার মাঝে আক্ষেপ নিয়ে নিটার থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করছে অর্ধ সহস্র শিক্ষার্থী।
এমতাবস্থায় নিটারিয়ানরা নিজেদের সরকারি সতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেখতে চাই। নিটারের সতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হবার ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। কারণ নিটারের নিজস্ব ১৪ একরের সুবিশাল ক্যাম্পাস আছে, সাথে বর্তমানে পাঁচটি বিষয়ে স্নাতক ও দুই বিষয়ে স্নাতকোত্তর চালু আছে। সেক্ষেত্রে নিটারের সরকারি হবার ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। তাই বর্তমান শিক্ষার্থীদের এখন একটাই দাবী নিটারের সরকারি করণ।