কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দশতম ও ফার্মেসি বিভাগের তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সিফাত হোসাইন জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে “বায়োমেডিকেল সাইন্স” নিয়ে ৫ বছর মেয়াদে ফুল ফান্ডে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন। গত ২রা মে এক মেইলের মাধ্যমে জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি কতৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত ২৫শে জুন তিনি ভিসার অনুমোদনও পেয়েছেন এবং তিনি আগামী ১০ আগস্ট পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে দেশত্যাগ করবেন।
বাহিরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরিকল্পনা করেন কবে?
যখন আমি প্রথম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাই এবং আমার বিষয় ছিলো হেলথকেয়ার সম্পর্কিত তখন থেকেই মাথায় ছিলো বাহিরের দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাবো অর্থাৎ বি-ফার্ম ১ম বর্ষ থেকেই চিন্তা করেছিলাম।
কবে থেকে আইয়েলটস ও জি আরই এর প্রস্তুতি নিতে শুুুরু করলেন ? একাডেমিক পড়াশোনা ও প্রস্তুতি কিভাবে সমন্বয় করলেন?
দ্বিতীয় বর্ষ থেকে সামান্য সময় দিতাম, কিন্তু ৫ম বর্ষে অনেক সময় দিয়েছি। বাসায় পড়া হতোনা তাই বিসিএস কনফিডেন্সে ভর্তি হয়ে ঐখানে পড়তাম। সেখানে সবাই বিসিএস এর পড়া পড়তো, আমাকে ইংলিশ পড়তে দেখে সবাই বলাবলি করে যে তুমি কি পড়ো। তবে সেখানে খুবই ভালো একটা কমিউনিটি সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক হয়েছে।
কোনো রিসার্চ পেপার ছিলো কি না -পেপার থাকলে কিভাবে এগুলো এডমিশনে সাহায্য করে?
আমার পাবলিশড কোন পেপার নাই কিন্তু পাবলিশ করার জন্য ২ টা পেপার রেডি করে রেখেছি। প্রফেসর ভাইভা নেয়ার সময় আমি সেগুলো দেখানোর ইচ্ছা প্রকাশ করি। উনারা অনুমতি দিলে স্ক্রীন শেয়ার করে কাজগুলো দেখাই, যা উনাদের অভিভূত করে।
অ্যাপ্লিকেশন প্রক্রিয়া ও এডমিশন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আকারে কিছু বলেন?
যেহেতু অনেক আগে থেকেই বাহিরের দেশে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল তাই গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের সহায়তায় এডমিশন সম্পর্কে সবসময় খোঁজ খবর রাখতাম।আমি সর্ব মোট পাঁচটি ভার্সিটিতে অ্যাপ্লিকেশন করেছিলাম এবং নিজে নিজে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কাজ করেছি। অনেক কিছুই শিখা হয়েছে এই রাস্তায় নেমে।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
কেবল মাত্র কুবিতে মাস্টার্স শেষ করলাম তবে ইতোমধ্যে কয়েকটি ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানিতে চাকরির জন্য আবেদন করেছি এবং সেখানে থেকেও পজিটিভ সাড়া পেয়েছি। সেই সাথে বাহিরেও এডমিশন হয়ে গেছে তাই এখনও মনস্থির করিনি ভবিষ্যতে কি করবো। আপাতত ইউএসএ তে পড়াশোনার জন্য চলে যাবো ইনশাআল্লাহ।
আপনার পিতামাতার অনুভুতি কেমন?
আমার পিতামাতা শিক্ষক। উনারা চেয়েছিলেন যাতে আমি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হই। এই খবর শুনে উনারা খুবই খুশি হয়েছেন।
আপনার নিজস্ব অনুভুতি কি?
আমার অনেক আগের মনের আশা যা পূরণ হতে চলছে তাই আমি কিরকম খুশি তা বলে বা লিখে প্রকাশ করতে পারবো না।সেই সাথে আমি কিউরিয়াসও বটে যে ঐদেশের শিক্ষা ব্যাবস্হা আমাদের দেশের সাথে মিলবে কি না এবং সামনের দিনের চ্যালেন্জ গুলো মোকাবিলা করবার জন্য মুখিয়ে আছি।
অনুজদের কি পরামর্শ দিতে চান?
আসলে কিছুটা তথ্য ঘাটতির কারণে একটু সমস্যায় পড়ে ছিলাম।আমি প্রথমেই বলেছিলাম যে আমি মোট পাঁচটি ভার্সিটিতে এপ্লাই করেছি তার মধ্যে এই পর্যন্ত ৫টা ভার্সিটির থেকে ৪ টা একসেপ্ট করেছে কিন্তু কোনটাতে কোন ফান্ড নাই। তারা সব ফান্ড আগেই দিয়ে শেষ করে ফেলেছে। জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি আমাকে প্রথমে কোন ফান্ড দেয়নি, এক্সেপ্ট লেটার দেয়ার প্রায় ১৫ দিন পর পুনরায় ফান্ডিং লেটার দিয়েছে। আমার গুড লাক এজন্য শেষে ফান্ডিংটা মিলেছে। বাকী একটার এখনও রেজাল্ট দেয়নি। সবার উদ্দেশ্যে এটাই বলা যে, অবশ্যই জানুয়ারি ১৫ তারিখের মধ্যে এপ্লাই করে ফেলতে হবে, এরপর করলে এডমিশন পাওয়া যাবে কিন্তু ফান্ড পাওয়া যাবেনা। বিষয়টা কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ।