বগুড়া শেরপুরে এক মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই ব্যবসায়ীর নাম মো. সাদ্দাম হোসেন (২৮)।
রবিবার রাত অনুমান নয়টার দিকে উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত সাদ্দাম হোসেন টাঙ্গাইল সদরের সাদুল্লাপুর গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতেই লাশ মহাসড়কে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা-এমনটাই অভিযোগ করেন সাদ্দামের পরিবার। নিহতের বড় ভাই এনামুল হক জানান, সাদ্দাম হোসেন একজন ব্যবসায়ী। স্থানীয় বাজারে তার একটি মুঠোফোনের দোকান রয়েছে। প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল রবিবার সকালে দোকানে যায়। ওইদিন বিকেলে দোকানটি বন্ধ করে বন্ধুদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী ঘুরতে বের হয়।
এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাব্বী নামে তার এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্ধ্যার দিকে তার সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু কথা বলে সাদ্দামকে অসুস্থ মনে হচ্ছিল। আর এটি ছিল তার সঙ্গে শেষ কথা।
পরবর্তীতে তাদের দুইজনের মুঠোফোনই বন্ধ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে গতকাল রবিবার মধ্যরাতে পুলিশের মাধ্যমে দুর্ঘটনায় সাদ্দাম নিহতের খবর পেয়ে বগুড়ায় ছুটে আসি এবং ভাই সাদ্দামের লাশ হিসেবে সনাক্ত করি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পূর্বের কোনো জেরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিতে নিহতের লাশটি মহাসড়কের ওপর ফেলে দেয় ঘাতকরা। কারণ তার শরীরে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কোনো চিহ্ন নেই। এমনকি সিসি টিভির ফুটেজে গাড়ীদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘটনার দিন ও রাতে সড়ক দুর্ঘটনার কোনো চিত্র পাওয়া যায়নি। তবে অজ্ঞাত পরিচয়ের একটি ট্রাক থেকে সেখানে অচেতন অবস্থায় এক যুবককে ফেলে দিতে দেখা যায়। পরে উদ্ধার হওয়া যুবকটি বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে মারা যায়। আর সে হলো আমার ভাই সাদ্দাম। সড়ক দুর্ঘটনায় তার কোনো মৃত্যু হয়নি দাবি করে নিহতর বড় ভাই এনামুল হক বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আব্দুল ওয়াদুদ জানান, মহাসড়কের গাড়ীদহ বাসস্ট্যান্ডে ফ্লাইওভারের নিচে যুবকটিকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। একপর্যায়ে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত ওই যুবকটিকে উদ্ধার করে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাইওয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে এরই মধ্যে পুলিশ মাঠে কাজ শুরু করেছেন। আসলে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে না-কি তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে-সেটি জানতে হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই কেবল মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা ও বলা সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে ময়না তদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তীতে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।