ময়মনসিংহের ভালুকায় ৫ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ধুম্রজাল সৃষ্টি করে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ধর্ষণকে ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির নামধারী নেতাদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ধর্ষকের বিচারের দাবীতে গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ভুক্তভোগী পরিবার ও সেচ্ছাসেবী সংগঠন ভালুকা স্টার ক্লাব ভালুকা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের হাতিবেড় এলাকায়। জানাজায়, ওই এলাকার তুবা নামে ৫ বছরের এক শিশু একই এলাকার আব্দুল কাদেরের বখাটে পুত্র আনারুল(৩৬)’র দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ধর্ষক আনারুলকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
ধর্ষনের শিকার শিশু তুবা(৫) বর্তমানে
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনায় তুবার বড় ভাই মবিন হোসাইন বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ধর্ষনের শিকার শিশুটির বড় ভাই মবিন হোসাইন জানায়, গেলো বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে ধর্ষনের শিকার ৫ বছরের শিশু তুবা বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্থানীয় এমরানের মাছের প্রজেক্টের কাছে খেলতে গেলে ধর্ষক আনারুল(৩৬) ওই শিশুকে তেঁতুল খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে ওই এলাকারই মজিফুর মাষ্টারের পরিত্যক্ত বাড়ির ভিতরে আমড়া গাছের নিচে ধর্ষনের চেষ্টা করলে ওই শিশুর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষক আনারুল(৩৬) পালিয়ে যায়। পরে ধর্ষণের শিকার ৫ বছরের শিশু তুবাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।
ধর্ষণের শিকার শিশু তুবা(৫)’র পরিবার সদস্য ও স্থানীয়রা আরোও জানায়, ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ধর্ষক আনারুল(৩৬)কে গণধোলাই দিলে ধর্ষণের কথা শিকার করে আনারুল। পরে স্থানীয়রা ধর্ষক আনারুলকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করলে স্থানীয় হাবুল, বিল্লাল সহ কতিপয় বিএনপির নামধারী নেতারা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিথ্যা ধুম্রজাল সৃষ্টি করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে।
ধর্ষণের শিকার শিশু তুবার চাচা আলাউদ্দিন ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি গণমুক্তির এ প্রতিবেদককে জানায়, ধর্ষণের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ধর্ষণকারীকে গণধোলাইয়ের অভিযোগে উল্টো ধর্ষণের শিকার শিশু তুবার পরিবারকেই মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। তারা আরও জানায়, ঘটনার পর থেকেই ওই এলাকার স্থানীয় বিএনপির নামধারী কতিপয় নেতারা আর্থিক সুবিধা ভোগ করার উদ্দেশ্যে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের পক্ষেই প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে সালিশের মাধ্যমে তা ধামা চাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করে আসছিলো। এছাড়াও গণধোলাইয়ের ঘটনায় ধর্ষণের শিকার শিশুর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা প্রকার ইন্দোন দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে ওই সব নামধারী নেতাদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্ত করে ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।
ভালুকা মডেল থানার ওসি শামছুল হুদা খান জানান, বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ধর্ষককে আটক করে গণধোলাই শেষে পুলিশকে খবর দিলে আহত অবস্থায় ধর্ষককে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ওই মামলায় অভিযুক্ত আনারুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বর্তমানে আসামী আনারুল ও ভিকটিম ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।