amadermuktokantho
চট্টগ্রামশনিবার , ৭ অক্টোবর ২০২৩

মুন্সীগঞ্জে ছোট হচ্ছে লৌহজংয়ের মানচিত্র

মতিউর রহমান রিয়াদঃ
অক্টোবর ৭, ২০২৩ ১১:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার বর্ষার শেষ মুহূর্তে পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীতে উত্তাল ঢেউ আর প্রবল স্রোতের কারণে ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে পদ্মা নদীর তীর ঘেষা উপজেলার বড় নওপাড়া গ্রামের বসতভিটা। গত ১ সপ্তাহে লৌহজং- তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামে ইতিমধ্যে ১০/১৫ টি বসতভিটা বিলীন হয়েছে। অনেকে সরে গেছেন নিরাপদ স্থানে। সর্বনাশা পদ্মার ছোবলে প্রতিবছরই আঘাত হানছে আড়াই লাখ জনসংখ্যার বসবাসরত এই উপজেলার মানচিত্রে। দিনে দিনে ছোট থেকে ছোট হচ্ছে লৌহজংয়ের মানচিত্র।স্থানীয় বাসিন্দারা জানান গত কয়েক মাস যাবত লৌহজং – তেউটিয়া ইউনিয়নের বড় নওপাড়া গ্রামে কমবেশি ভাঙছে তবে সপ্তাহ খানেক যাবত তিব্র গতিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। দিনে-রাতে অনিয়মতান্ত্রীকভাবে বালু বহনকারী বাল্কহেড চলাচলে উত্তাল ঢেউয়ের কারণে এসব এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।

স্থানীয় ভুক্তভোগী স্বামীহারা আনোয়ারা বেগম বলেন এহন আমরা কই যামু, যাওয়ার মতো কোনো যায়গা নাই। এই আশি বছর বয়সে তিনবার সর্বনাশা পদ্মার ভাঙনের মুখে পরে এহন নিঃস্ব হয়ে গেছি।

শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মুত ইউনুছ শেখের ছেলে শহিদুল ইসলাম বলেন পুরনো ভিটেবাড়ি পদ্মার গর্ভে চলে যায়। পরে তরিগরি করে ঘরটি ভেঙে অন্য স্থানে সরিয়ে রাখা হয়। টেউটিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বড় নওপাড়া গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কখন পদ্মায় গিলে খায় সে আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদীর পাড়ের মানুষ।

এলাকাবাসী জানান,এর আগে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন থেকে বাড়িঘর রক্ষার চেষ্টা করে উপজেলা প্রসাশন। কিন্তু ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।
এর আগে গত বছরের ১৮ মে উপজেলার শামুরবাড়ি ও হাড়িদিয়া গ্রামে পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পদ্মা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।

লৌহজং-তেউটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, পদ্মা ভাঙ্গনের খবর পেয়ে জরুরী ব্যবস্থা হিসেবে নদী শাসন ও ভাঙ্গন রোধে শুক্রবার সকাল থেকে পুরোদমে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলেছে ৩২ কোটি টাকার সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় ২৫০ কেজি ওজনের প্রায় ৮ লাখ বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। এরপর বালু ও সিমেন্ট মিশ্রিত আরোও পোনে ২ লাখ বস্তা ফেলা হবে পদ্মা সেতুর বাম তীরে।

মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, আপদকালিন এ সময়ে আমরা জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গণ প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। এদিকে লৌহজংয়ের খড়িয়া থেকে টঙ্গীবাড়ির দিঘীর পাড় পর্যন্ত ৯.১০ কিলোমিটারের দীর্ঘ এলাকায় পদ্মা ভাঙ্গন রোধে সরকার প্রায় ৪শ’ ৪৬ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে গত বছরের এপ্রিল থেকে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। কাজের অগ্রগতি মাএ ২০ শতাংশ। এই কাজ ধীর গতিতে এগোচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় সাংসদ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, পদ্মার ভাঙ্গণরোধে ৪শ’ ৪৬ কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণ চলাকালীনের বাইরে আরও সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙ্গণ দেখা দেয়ায় নতুন ৩২ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুমের আগেই নদী ভাঙ্গণ দেখা দেয়ায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী ভাঙ্গণরোধে সকল চেষ্টা চালাচ্ছেন। শুধু বালুর বস্তা ফেলাই নয় ভাঙ্গণরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যারা পদ্মা নদীতে অবৈধ ভাবে ড্রেজিং করে বালু কাটছে তাদের কোন ছাড় নেই। অবৈধ বালু লুটকারীদের বিরেুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী নরেন্দ্র সংকর চক্রবর্তী জানান, পদ্মা ভাঙ্গণরোধে ৪শ’ ৪৬ কোটি টাকার ৯.১০ পয়েন্ট স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। এর সাথে আরও ৪.০০ পয়েন্ট ৩২ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে নদী ভাঙ্গণরোধে জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন জানান পদ্মা ভাঙনের সাথে সাথে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙ্গা রোধ না হওয়া পর্যন্ত জিও ব্যাগ ফেলা হবে।আগামী দুএকদিনের মধ্যে ভুক্তভোগীদের ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।