২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে লক্ষ্মীপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কলেজ শিক্ষার্থী সাদ আল আফনান। ৫ আগস্ট পরবর্তীতে শহীদ আফনান হত্যার ঘটনায় মামলা হয়। প্রায় ৮ মাস পর সেই মামলার অন্যতম আসামী ও নিষিদ্ধ সংগঠন হেযবুত তওহীদের সক্রিয় সদস্য রুবেল হোসেনকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ। এরআগে সোমবার রাত ৯টার দিকে জেলা শহরের দক্ষিণ স্টেশন এলাকা থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
আসামী রুবেল হোসেন সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের আবিরনগর গ্রামের ফজল করিমের ছেলে। তিনি হেযবুত তওহীদের জেলা শাখার সক্রিয় সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় গণমাধ্যম জেটিভি অনলাইন ও দেশেরপত্র পত্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে লক্ষ্মীপুরে কাজ করে সাংবাদিক বনে যান। পরে তাহেরপুত্র ও জেলা যুবলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন টিপুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠেন। আওয়ামী লীগের আমলে স্থানীয় নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদে প্রার্থী ছিলেন তিনি।
জুলাই আন্দোলনের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গেলো বছর আগস্টের শুরুতে যখন লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়, তখন সাংবাদিকতার আড়ালে রুবেল হোসেন শিক্ষার্থীদের ছবি ও পরিচয় সংগ্রহ করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং প্রশাসনের কাছে পাচার করতো। সেই তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের হয়রানির পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হতো। যেদিন শহীদ সাদ আল আফনান গুলিবিদ্ধ হন, সেদিনও সক্রিয় তৎপরতা ছিল রুবেলের।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ জানান, শহীদ আফনান হত্যা মামলার ৫৮ নম্বর আসামী রুবেল হোসেন।
হত্যা মামলার আসামী সাংবাদিক রুবেলকে গ্রেফতারের পর লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলালের ছেলে ও সাংবাদিক আরাফাত হোসেন শান্ত তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, রুবেল হোসেন সাংবাদিকতার আড়ালে থানায় দালালি করতো। জুলাই আন্দোলনে যে সাংবাদিকরা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন, তাদের তথ্য-উপাত্ত আওয়ামী লীগ এবং প্রশাসনকে দিতো সে।