ডেক বসানো চুলার পরিপূর্ণ কাজ শেষ না হলেও পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে উক্ত ডেকে রান্নার কার্যক্রম শুর করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ফটিকছড়ির নাজিরহাট-মাইজভাণ্ডার শরীফ সড়কের রোসাংগিরী ইউনিয়নের মাইজভাণ্ডার শরীফ এলাকার আজিমনগরসস্থ বিশাল চুলার ওপর বসানো হয়েছে ডেকটি।
দেশের অন্যতম মোস্তফা হাকিম শিল্পগ্রুপের হোছনে-আরা-মনজুর ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ডেকটি বসিয়েছে। ডেকটি ছাড়াও উক্ত স্থানে রয়েছে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফকে কেন্দ্র করে হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী(ক.) ও হযরত গোলামুর রহমান বাবা ভাণ্ডারী(ক.) নামে উক্ত ট্রাস্ট কর্তৃক নির্মিত আশেকানে মাইজভাণ্ডারী বিশ্রামাগার,সুবিশাল মসজিদ,দৃষ্টিনন্দন শাহী গেইট।
এছাড়া আরো ব্যপক পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টগণ।
হজরত গাউসুল আজম মাইজভাণ্ডারী শাহি তবাররক ডেক’ নামের আড়াইশ’ মণের ডেকটি বসানোর পরিকল্পনা থেকে শুরু করে সবকিছু তদারকি করেছেন অত্র ট্রাষ্টের প্রতিষ্ঠাতা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম।
জানা যায়,বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে প্রায় ছয় মাস সময় লেগেছে ডেকটি তৈরি করতে। স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি ডেগটির ওজন প্রায় ৪০০০ কেজি। এর উচ্চতা ৯ ফুট এবং প্রস্থ ১১ ফুট। ১০ ফুট উঁচু চুলায় ডেগটি বসানো হয়েছে। ভারত থেকে আনা অত্যাধুনিক ফায়ার ব্রিক স্থাপন করা হয়েছে চুলায়। ডেগ ঘুরানোর জন্য চুলার ওপর অটোমেটিক ক্রেন বসানো হয়েছে।
বন্দরের কনটেইনার পরিবহনের কাজে ব্যবহার হয় এমন একটি লরি (প্রাইম মুভার) দিয়ে এটি ভাটিয়ারির একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা থেকে ফটিকছড়িতে আনা হয়েছে।
এটি স্থাপনের জন্য চার গন্ডা জমি কিনে শেড নির্মাণও করা হয়েছে। সব মিলিয়ে কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ হয়েছে। শুধু ডেগটি তৈরি করতে ২৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হবে লাকড়ি।
ডেকটিতে একসঙ্গে আড়াইশ’ মণ খাবার রান্না করা যাবে যা খেতে পারবেন ৬৪ হাজার লোকে। এটাতে খিচুড়ি, পায়েশ, শাহি জর্দা রান্না করা যাবে। বড় ডেকের পাশে চারটি অপেক্ষাকৃত ছোট ডেক থাকবে। বড় ডেকে রান্নার পর ছোট ডেকে তবাররক নামানো হবে। সেখান থেকে পরিবেশন করা হবে। মাংস,ভাত রান্না প্রক্রিয়া শুরু হবে আরো পরে। সেখানে দায়িত্বরত বার্বুচিকে ভারতের আজমীর শরীফস্থ ডেকের রান্না কিভাবে করে তা ট্রেনিং বা দেখে আনার মাধ্যমে এখানে শুরু করবে বলে জানা যায়।
বছরে প্রধানত পাঁচটি দিনে রান্না হবে এ শাহি ডেকে। সেগুলো হলো ১২ রবিউল আউয়াল, ১০ মহররম, ১০ মাঘ, ২৯ আশ্বিন ও ২২ চৈত্র। এ ছাড়া কেউ মানত করলে তাকে এ ডেকে রান্নার সুযোগ দেওয়া হবে। প্রধান দিবসগুলোতে রান্নার আগে আগ্রহীরা যাতে শরিক হতে পারেন সেই ব্যবস্থা থাকবে।
আগামী শুক্রবার (৮ জুলাই) প্রথমবারের মতো ২৫ মণ পায়েস রান্নার মাধ্যমে ডেগটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করা হবে। পরবর্তী বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এদিকে ডেকটি দেখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন আসছেন। বিশেষ করে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ জেয়ারত শেষে ডেকটি দেখতে আশেক ভক্ত ডেকটি দেখে যাচ্ছেন।
সেখানে দায়িত্বরত মোহাম্মদ মনির হোসাইন জানান,এ ডেকটি বসানো চুলার আরো কাজ বাকি রয়েছে।তবে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে পায়েস রান্নার মধ্যে দিয়ে পরিক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হবে। পরবর্তী বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে।