যখন দুজন বা ততোধিক ব্যাক্তির নিজেদের মধ্যে সমান কর্তৃত্বের অধিকার তৈরি হয় তখন সেটাই হয় সম্পর্ক। সমান কর্তৃত্ব বলতে বুঝানো হয়েছে যে অধিকারে যদি মা-বাবা সন্তানকে শাসন করে সন্তানেরও সে অধিকার আছে মা-বাবার সামনে তার যুক্তিগুলো তুলে ধরাকে।
একটি সম্পর্ক গড়ে তুলতে যেসকল গুণগুলো প্রয়োজন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সততা, বিশ্বস্ততা, বন্ধুত্ব, স্বচ্ছতা, ভালোবাসা। তবে এগুলো ছাড়াও আরেকটি বিশেষ জিনিসের প্রয়োজন রয়েছে। এবং সেটা হলো সময়। পরস্পরের জন্যে পর্যাপ্ত সময়। কারো সাথে আপনার সম্পর্কটি যদি একটি ঘরের সাথে তুলনা করতে চান সে ঘরের দরজা-জানালা হবে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা। আর সে ঘরের ভিত্তি হবে সময়। যত মজবুত ভিত্তি তত পাকাপোক্ত ঘর।
বিপরীত পাশে দাড়িয়ে থাকা মানুষটার জন্যে আপনার অবশ্যই সময় বের করতে হবে। আপনি যতটুকু সময় তাকে দিবেন আপনাদের সম্পর্কটা ততটাই দৃঢ় হতে থাকবে। আপনারা একে অপরকে ধীরে ধীরে জানতে শুরু করবেন।
একটা স্বচ্ছ বন্ধুত্ব ও ভালোবাসার সৃষ্টি হবে। পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস তৈরি হবে। বিশ্বাস আদায় করে ফেলা এই সম্পর্কটায় আপনি আরও কিছু সময় বিনিয়োগ করুন দেখবেন সময়ের সাথে সাথে সে আপনার খুব কাছের এবং প্রিয় একজন মানুষ হয়ে উঠছে। এই প্রিয় মানুষ যে কেউ হতে পারে। আপনার বাবা-মা, ভাই-বোন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, অফিসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী, ক্লাসের কোনো সহপাঠী যে কেউ।
যেমন আমাদের পরিবারের কথাই ধরা যাক। আমাদের পরিবারের বাবা-মা, ভাই-বোন কোনো একজন আপনার প্রিয় হতেই পারে। সেই প্রিয় মানুষটির সাথেই কিন্তু আমরা খুব ভালো একটা সময় কাটাই। ধীরে ধীরে তারা আমাদের আরও কাছের হয়ে যায়। এটার একমাত্র কারণ তাদের সাথে সুন্দর একটা সময় কাটানো।
আবার মনে করেন আপনার সাথে একজনের অনেক ভালো একটা সম্পর্ক আছে। তাকে যদি সময় দেয়া কমিয়ে দেয়া হয় দেখা যাবে ধীরে ধীরে সেই সম্পর্কটায় মরিচা পরেছে। তার সাথে পুরনো সেই সম্পর্কটা নেই। এখন আবার তার সাথে সম্পর্ক ভালো করতে চাইলে কিংবা অন্যকারো সাথে নতুন করে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি করতে চাইলে তাকে সঙ্গ দিতে হবে। তার সাথে একটা ভালো সময় কাটাতে হবে।
যাতে পুনরায় তার সেই ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং ভরসাটা ফিরে আসে এবং একটা সুন্দর বন্ধুত্ব গড়ে উঠার মাধ্যমে সম্পর্কের শুভ সূচনা হয়।
আসলে সম্পর্কটা অনেকটা গাছের মতো। এই গাছের পরিচর্যা করতে হবে পরস্পরের সাথে সময় ব্যয় করে উভয়পাশের মানুষকে। তাহলেই হয়তো সেখান থেকে ভালো ফল পাওয়া যাবে। আর কেও হয়তো তার মন থেকে তার প্রিয় মানুষটার প্রতি সকল অনুভূতির মৃত্যু কামনা করবে না।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল নোমান,
শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।