amadermuktokantho
চট্টগ্রামশুক্রবার , ৭ জুলাই ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সাব–রেজিস্ট্রারের অপসারণ চেয়ে দলিল লেখকদের তৃতীয় দিনের কর্মবিরতি পালন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
জুলাই ৭, ২০২৩ ৫:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করেছেন মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের দলিল লেখকেরা। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে সাব-রেজিস্ট্রার রাশিদা ইয়াসমিন মিলি ও তাঁর দুই সহযোগীর প্রত্যাহার চেয়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন। দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কারণে তিন দিনে প্রায় দেড় কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। সেই সাথে দলিল দাতা ও গ্রহীতারা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতি কর্মদিবসে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ৩০-৪০টি দলিল নিবন্ধন করা হয়। এতে সরকার প্রায় ৫০ লাখ টাকার রাজস্ব পায়। এই হিসেবে গত তিন দিন দলিল লেখকদের কর্মবিরতির ফলে সরকার ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
কর্মবিরতির ফলে দলিল দাতা ও গ্রহীতারা দুর্ভোগে পড়েছেন। কথা হয় উপজেলার কলমা থেকে জমি বিক্রি করতে আসা শরীফুল ইসলামের সঙ্গে। থাকেন ঢাকায়। দলিল লেখা বন্ধ থাকায় তিনি ও দলিল গ্রহীতা রেজাউল করিম বিপাকে পড়েছেন। শরীফুল বলেন, জমিটি বিক্রি করা অতি জরুরী। জমি বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশে পাঠাবো। এখানে এসে দেখছি দলিল লেখকেরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট করছেন। শিমুলিয়া থেকে আসা সামসুদ্দিন চোকদার জানান, তিনি এসেছেন নিজস্ব জায়গা ভাড়া দেওয়ার জন্য স্ট্যাম্প নিতে। স্ট্যাম্প কিনতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন।

গত মঙ্গলবার সাব-রেজিস্ট্রারের প্রত্যাহার চেয়ে মহাপরিদর্শক, নিবন্ধন বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দিয়েছেন উপজেলা দলিল লেখক সমিতি। অভিযোগপত্রের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, জেলা রেজিস্ট্রার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, সাব-রেজিস্ট্রার রাশিদা ইয়াসমিন কথায় কথায় দলিল লেখকদের সাময়িক বরখাস্ত করেন। কারণে-অকারণে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। স্মারক নম্বর ও তারিখ ছাড়া এসব নোটিশ পাঠান তিনি। আবার নোটিশ প্রত্যাহার ও বরখাস্ত করা দলিল লেখকের কাছ থেকে দুই অফিস সহকারীকে দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকার জন্য দলিলদাতা ও গ্রহীতাকে অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তুলে হয়রানি করেন তিনি। এমনকি দলিলের সাক্ষী ও শনাক্তকারীদের দালাল বলে গালি দেন এবং জেল খাটানোর হুমকি দেন।

এ ছাড়া লৌহজংয়ে সাব-রেজিস্ট্রার হয়ে আসার পর থেকে রাশিদা ইয়াসমিন রোব ও সোমবার অফিস করেন না বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। অফিসে এলেও বেলা ১১টার আগে তিনি হাজির থাকেন না। দুপুর ১২টায় এজলাসে বসে দেড়টার মধ্যে এজলাস ত্যাগ করেন। মধ্যাহ্নভোজের বিরতি দিয়ে বেলা তিনটায় তিনি অফিস ত্যাগ করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাব–রেজিস্ট্রারের কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। তাঁর এ খামখেয়ালির কারণে সেবাগ্রহীতাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

দলিল লেখক সমিতির আহ্বায়ক কামাল আহমেদ বলেন, সর্বশেষ গত সোমবার কয়েকজন দলিল লেখক সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে গেলে তাঁদের ভর্ৎসনা করেন। এ ছাড়া অন্য সময় তিনি সেবাগ্রহীতা ও সাধারণ মানুষের সামনে দলিল লেখকদের অপমানজনক কথা বলে থাকেন। সাব–রেজিস্ট্রার রাশিদা ও তাঁর দুই সহযোগী টিসি (ট্যাক্স কালেক্টর) মোহরার সাইদুল কবির ও অ-তালিকাভুক্ত নকলনবিশ পলাশ চন্দ্র দাসের অন্যত্র বদলি দাবি করে তাঁদের বদলি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানান।

দলিল লেখক সমিতির আনা এসব অভিযোগকে বানোয়াট বলে দাবি করেন সাব-রেজিস্ট্রার রাশিদা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, দলিল লেখকেরা অনৈতিক সুবিধা পায় না বলে এসব রটাচ্ছেন। অসদাচরণ ও গালাগালের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল আউয়াল জানান, সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের সমাধানের বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পাননি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।