গণমাধ্যমে কথা বলার ব্যাপারে এক প্রকার অলিখিত নিষেধাজ্ঞা চলছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি)। প্রশাসনের দায়িত্বশীল অধিকাংশ ব্যক্তিরা এড়িয়ে চলছেন সংবাদকর্মীদের। সংবাদ সংগ্রহে প্রয়োজনীয় বক্তব্য নিতে গেলে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে মিলছে অসহযোগিতা।অনেকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও মিলছে না কোন সাড়া।
অভিযোগ উঠেছে বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হবে আগামী মাসের শুরুতে। সেই পর্যন্ত সংবাদকর্মীদের কাছ থেকে দূরত্ব রাখার নির্দেশনা এসেছে প্রশাসন প্রধানের কাছ থেকে। মেয়াদের শেষ সময়ে তিনি কোনো বিতর্কিত খবরের শিরোনাম হতে চান না বিধায় এই সিদ্ধান্ত। তবে এ ধরণের অভিযোগ নাকচ করে দেয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের দুজন দায়িত্বশীলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা চলতি মাসে কোনো কথা বলবেন না বলে জানান। অপ্রতুল ড্রেনেজ সিস্টেম নিয়ে তথ্য সংগ্রহে গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের প্রধান হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও মেলেনি কোন সাড়া।
এদিকে গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক ড. তারেক মাহমুদ আবীর অভিযোগ তোলেন গণমাধ্যমে কথা বলায় তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য নিতে ফোন দেয়া হয় রেজিস্ট্রার মোঃ মনিরুল ইসলামকে। তিনি বলেন, ভিসি (উপাচার্য) স্যারের অনুমতি ছাড়া আপাতত গণমাধ্যমে কথা বলতে পারছি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোঃ হারুন অর রশিদকে সভাপতি করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তের অগ্রগতি জানতে তার সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি প্রতিবার গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের বর্তমান পরিচালক সুজন চন্দ্র পালের সঙ্গে কথা বলার জন্য গতসপ্তাহে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যার্থ হতে হয়েছে।
গণমাধ্যমে কথা বলায় প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের অপারগতার বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, আগামী ৫ই নভেম্বর বর্তমান উপাচার্য ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিনের মেয়াদ শেষ হবে। তিনি নিজে কোন বিতর্কিত সংবাদে মন্তব্য করতে চান না বিধায় সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যম এড়িয়ে চলছেন। স্বাভাবিকভাবে প্রশাসনের দায়িত্বশীলরা তার অনুসরণে নিজেরাও গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলছে। শেষ সময়ে গণমাধ্যম থেকে দূরত্ব রাখার অলিখিত নির্দেশনাও আসতে পারে উপাচার্যের কাছ থেকে।
গণমাধ্যমে কথা বলার ওপরে কোনরকম নিষেধাজ্ঞা আছে কিনা জানতে রোববার দুপুরে উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তার দপ্তরে গেলে তাকে সেখানে পাওয়া যায় নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ফয়সাল মাহমুদ রুমী বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা নির্দেশনা জারি করা হয় নি।