সাভারের অদুরে নয়ারহাট বিখ্যাত কোহিনূর গেট সংলগ্ন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ তথা নিটারে বর্তমানে পাঁচ বিষয়ে স্নাতক সন্মান চালু আছে। তার মধ্যে সবথেকে নবীন কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এবং ইলেক্ট্রিকাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ডিপার্টমেন্ট।
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে নিটারে প্রথম সিএসই ব্যাচ ভর্তি হয়। ভর্তি হবার পরই জানতে পারে যে প্রযুক্তি ইউনিটের অন্যান্য ক্যাম্পাস যেমন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সিএসই বিভাগের সিনিয়র ব্যাচগুলি এখনো গ্র্যাজুয়েট হতে পারেনি, কিন্তু নতুন ব্যাচ ভর্তি হয়ে চলেছে অবিরাম। সেখান থেকেই উদ্বেগের এবং সমস্যার শুরু।
করোনা মহামারীর কারণে নিটারের অন্যান্য বিভাগের দুটি অনলাইন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও সিএসই এবং ইইই বিভাগ পিছিয়ে ছিল অন্য কলেজগুলোর সাথে যৌথভাবে পরীক্ষা দেয়ার কারণে। প্রস্তুতি সম্পন্ন থাকা সত্ত্বেও অন্যদের জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে পিছিয়ে পড়ছিলো নিটারিয়ানরা।
করোনা পরবর্তী সময়ে কিছু উন্নতি ঘটলেও, পরীক্ষার রুটিন অন্যান্য বিভাগ থেকে আলাদা হওয়ায় তারা আরও পিছিয়ে পড়ে। চার মাসে সেমিস্টার করার প্রচেষ্টা চালালেও পিছিয়ে যাওয়া ঠেকাতে ব্যার্থ প্রশাসন। যারফলে শিক্ষার্থীরা বিশাল সেশন জটে পড়ে যায়।
বর্তমান পরিস্থিতি এমন দাড়িয়েছে নিটারের সিএসই বিভাগের ৫ম ব্যাচের আগমন ঘটছে যার ফলে ক্লাস/ল্যাব সংকট, শিক্ষক সংকট এবং পর্যাপ্ত ল্যাব ইকুইপমেন্ট সংকটের জন্য ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে চলেছে।
বছরে দুটি সেমিস্টার করার স্বপ্ন এখন অবাস্তব মনে হচ্ছে। ৩য় বর্ষের দুটি সেমিস্টার (লেভেল ৩-টার্ম ১ ও লেভেল ৩-টার্ম ২) ৮ মাসে সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে ভর্তি হওয়া টেক্সটাইল ডিপার্টমেন্ট, আইপিই ডিপার্টমেন্ট, ফ্যাশন ডিজাইন এন্ড এপেরাল ডিপার্টমেন্ট বর্তমানে লেভেল ৪ টার্ম ১ এর প্রথম সিটির দ্বারপ্রান্তে। নিটার সিএসই ও ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে শুরু করলেও অন্যান্য ইনস্টিটিউটগুলো দেরী করে শুরু করায় পরীক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে লেভেল ৪-টার্ম ১ শেষ হতে ৯-১০ মাস সময় লাগবে বলে ধারনা করা যাচ্ছে। ফলে লেভেল ৪-টার্ম ২ আরও দেরীতে শেষ হবে যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বিপজ্জনক। নিটারের সিএসই এবং ইইই বিভাগের ১ম, ২য়, ৩য় ব্যাচগুলিও একই ধরনের সেশন জটের সম্মুখীন হচ্ছে।
সর্বোপরি, সিএসই বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা(২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত) তাদের সাথে ভর্তি হওয়া অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের থেকে ন্যূনতম ৮ মাস পিছিয়ে আছে। এবং সেটি ১০-১২ মাসে রূপান্তরিত হবে বলে মনে হচ্ছে।
এই দীর্ঘ সেশন জটের ফলে ১০ম ব্যাচের সিএসই, ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছে।