কুবির কিছু স্বপ্নবাজ তরুণ স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি বিজ্ঞান ক্লাবের, চেয়েছিল বিজ্ঞানের বহুমুখী জ্ঞানকে কুবির গন্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশের সর্বস্তরের বিজ্ঞানপ্রেমীদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে। নিজেদের এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা করা হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব। এবছরের ১ সেপ্টেম্বর ক্লাবটি তাদের যাত্রার সাত বছর পার করে অষ্টম বছরে পা দিয়েছে৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীই এই ক্লাবের সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে ফার্মেসী, রসায়ন, গণিত, পদার্থবিদ্যা এবং প্রকৌশলে অনুষদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই এতে বেশি জড়িত।
ক্লাবটি নিয়মিত সায়েন্স মুভি নাইটস, ডিম ড্রপ প্রতিযোগিতা এবং বৈজ্ঞানিক ট্রিভিয়া নাইটস এর মতো কার্যক্রমে জড়িত। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বিভিন্ন স্কুলের শ্রেণীকক্ষে আউটরিচ কার্যক্রম রয়েছে। পাই দিবস, পরিবেশ দিবসের মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দিবসও ক্লাবটি আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান প্রসারে এবং প্রযুক্তি নির্ভর উন্নয়ন ও গবেষণায় ক্লাবটি নিরলস কাজ করে আসছে।
সাইন্স ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাহিদ ইভান বলেন, ‘কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ওই সকল স্বপ্নদ্রষ্টা সিনিয়রদের প্রতি যাদের হাত ধরে আজকে সায়েন্স ক্লাব এতদূরে। ক্লাবের ভান্ডারে ইতোপূর্বেই জমা হয়েছে অসংখ্য অর্জন। ক্লাবটি হিউম্যানয়েড রোবট তৈরি, ড্রোন তৈরি, নানাবিধ প্রজেক্ট তৈরিসহ নতুন অসংখ্য গবেষণার প্রাণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ।আমরা, বিজ্ঞানের জ্ঞানকে প্রসার এবং বিজ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করে তুলতে কুমিল্লায় অবস্থিত বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজসমূহে বিজ্ঞান ক্লাব উদ্বোধন এবং কর্মশালা পরিচালনা করছি। এছাড়াও দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে অবদান রাখা কৃতি ব্যক্তিত্বদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অসংখ্য সেমিনার পরিচালনা করে আসছি।’
‘ক্লাবকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে আমরা কুমিল্লায় ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অনুষদের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সমন্বয় ঘটিয়ে সময়ের পরিক্রমায় উপযোগী পরিকল্পনা করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর কাজ করে যাচ্ছি। আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অসংখ্য পুরস্কার তারই স্বাক্ষর বহন করে।’
তিনি বলেন, ‘ক্লাবের একজন কর্মী হিসেবে আমি বিশ্বাস করি,কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব সঠিক দিকনির্দেশনা এবং উপযুক্ত অনুদান পেলে, শীঘ্রই দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সর্বোচ্চ অবদানটুকু রাখতে সক্ষম হবে।’
বর্তমান সভাপতি মুশফিক এম. আমান বলেন ‘প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সায়েন্স ক্লাব এবং ক্লাব সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে সায়েন্স ক্লাব প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মনস্ক তরুণ প্রজন্ম সৃষ্টি করা। এরই ধারাবাহিকতাই সাইন্স ক্লাব প্রতি বছর জাতীয় সায়েন্স ফেস্টিভ্যাল, সায়েন্স অলিম্পিয়াড, রোবটিক্স ওয়ার্কশপ , গবেষণা- বিষয়ক সেমিনার, বিজ্ঞান জনপ্রিয়করন (স্কুল এবং কলেজ) প্রোগ্রাম এবং উদ্ভাবনীসহ আরো বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞান ভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকে। এই কার্যক্রম গুলোর মাধ্যমে সায়েন্স ক্লাব তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে থাকে। একই সাথে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ ভাবে গড়ে তুলতে সায়েন্স ক্লাব কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি সবার আন্তরিক সহযোগিতায় সায়েন্স ক্লাব কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তুলে ধরবে।’