সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কিছু পেইজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে কটাক্ষ করে বিভ্রান্তিমূলক স্ট্যাটাস শেয়ার করা হচ্ছে। এতে সত্য মিথ্যার সংমিশ্রণে আসল রহস্য নিয়ে সকলের কাছে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
এমন একটি ঘটনা হলো জবি শিক্ষক সমিতির বিরোধিতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে জেমসকে আনা সম্ভব হয়নি বলে বিভিন্ন পেজে পোস্ট করায় শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সমিতির কর্মকান্ড নিয়ে ট্রল করছে। আবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক বলেছিলেন, জবি ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদকে নিয়ে শিক্ষক সমিতির সংবাদ সম্মেলনকে ধামাচাপা দিতেই জেমসকে আনার গুজব ছড়ানো হয়েছিল।
কিন্তু ঘটনার সত্যতা জানতে চলতি দায়িত্ব প্রাপ্ত জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.কামালউদ্দিন আহমদকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, মূলত ডিএমপি থেকে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকায় আমরা জেমসকে আনতে পারিনি। পরদিন থেকে পূজা শুরু হওয়ায় পুলিশ প্রশাসন থেকে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ফোর্স দিতে তারা অপারগ ছিল। তিনি আরও বলেন, শিক্ষক সমিতির নেতারা উপাচার্য স্যার অসুস্থ বিধায় স্যারকে বাদ রেখে খুব বেশী জমকালোভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন না করার বিষয়টি বিবেচনা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু মূলত নিরাপত্তার কারণেই জেমসকে আনা হয়নি। নতুবা জেমস আমাদের মাঝে জগন্নাথ মাতাতেন।
উক্ত ঘটনায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বলেন, উপাচার্য অসুস্থ বিধায় স্যারকে বাদ রেখে খুব বেশী জমকালোভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন না করার বিষয়টি বিবেচনা করার প্রস্তাব শিক্ষক সমিতি দিয়েছিল মাত্র। জেমসকে আনার কোন বিরোধীতা করেনি। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজেও জেমস আসবে জেনে খুশি হয়েছিলাম।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শিক্ষক সমিতির এই নেতার বক্তব্যকে ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের প্রারম্ভে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। জাতীয় সংগীত, পতাকা উত্তোলন শেষে পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করার পর তাদেরকে মাইকে ডাকা হয়। এসময় সমিতির নেতৃবৃন্দ জানতে চান বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনে কেন কোন কাজে তাদেরকে ডাকা হলো না? এমনকি তাদেরকে শেষ সময়েও কোন কাজে ডাকা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৭শত শিক্ষকের নির্বাচিত এই প্রতিনিধিদের কেন অবমূল্যায়ন করছেন জানতে চান সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমান। জবাবে রুটিন দায়িত্ব উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমদ বিষয়টিকে একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে বলে তিনি সমিতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং নিজেদের প্রোগ্রামে মন খারাপ না করতে অনুরোধ করেন। পরে বিষয়টির সেখানেই সমাপ্তি হয় এবং সমিতির নেতৃবৃন্দ পরবর্তী সব অনুষ্ঠানে তাঁর (উপাচার্য) সাথে যোগদেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে কাজ করে আসছে। তাদের দাবির প্রেক্ষাপটে সারা বাংলাদেশে আগামীবার থেকে একক ভর্তি পরীক্ষা হবে যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া নতুন ক্যাম্পাসের কাজ বেগবান করতে নজর রাখা, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের স্বার্থ রক্ষা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগের দাবিসহ বিভিন্ন সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে আসছে।