ঈদগাঁও প্রতিনিধি
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং জেলার নবম থানার অফিসার ইনচার্জ ওসির নাম ভাঙিয়ে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা হাসান আলীর বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
এঘটনায় মঙ্গলবার ২৮ ফেব্রুয়ারি ছৈয়দ আলম নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে হাচান আলীকে অভিযুক্ত করে ঈদগাঁও থানায় লিখিত এজাহার দাখিল করা হয়। অভিযুক্ত হাচান আলী ইসলামপুর ইউনিয়নের ধর্মের ছড়া এলাকার মৃত আলী হোসেনের ছেলে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, বর্ণিত উপজেলার গোমাতলীর মৌজায় হাফেজের ঘোনা নামে ০১টি অনুমান ২৪০ একর এর চিংড়ি ঘেড় আছে। উক্ত ঘেড় নিয়া নাপিতখালী মৌজার কৈলাশের ঘোনা নামক ঘেড়ের লোকজনদের সাথে পূর্ব থেকেই খালে দখল বেদখল নিয়া সমস্যা বিদ্যমান। আমরা এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। বর্ণিত আসামী এলাকার সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই হওয়ায় এলাকায় বিভিন্ন বিচার শালিস করিয়া থাকে। বিধায় আমরা আমাদের ঘোনার কমিটির সদস্যরা এই সিদ্ধান্তে উপনিত হই যে, আসামী হাসান আলী কে ডেকে একটি উপায় বের করবো। তখন গত ৩০/১২/২০২২ইং তারিখ হাসান আলী কে ডেকে কীভাবে খাল আমাদের পুনরুদ্ধার করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা কালে তিনি ৩,৪৫,০০০/- (তিন লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার) টাকা দিলে তিনি সমস্যার সমাধান করে দিবেন বলে জানায়। তাহার উপর আস্থা আনিয়া আমরা গত ০২/০১/২০১৩ইং তারিখ অনুমান বেলা ১১.০০ ঘটিকার সময় কক্সবাজার সদর থানাধীন আসামীর নিজ ভাড়াটিয়া বাসায় ৩৫,০০০ (পয়ত্রিশ হাজার) টাকা, গত ইং ০৩/০১/২০২৩ তারিখ অনুমান দুপুর ১২.০০ ঘটিকার সময় ঈদগাঁও থানাধীন ঈদগাঁও ইউপিস্থ বঙ্কিম বাজার মা মনি হাসপাতালের সামনে রাস্তার উপর নগদ ১,০০,০০০/- ঈদগাঁও ইউপিস্থ ঈদগাঁও বাজারের ওয়ালটন শোরুমের নীচে ২,১০,০০০/- (দুই লক্ষ দশ হাজার) টাকা সর্বমোট টাকা, এডিশনাল এসপিকে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা, এসপিকে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা দিয়ে ম্যানেজ করবো। এরপর খাল পুনরুদ্ধার করা যাবে। ইতোমধ্যে অফিসার ইনচার্জ মহোদয় অভিযোগের প্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জ মহোদয়ের রুমে ঘোনার বিষয়ে আলোচনা করি। তিনি প্রাথমিকভাবে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার উভয় পক্ষকে বিরোধী খান তিয়ান সম্পতিতে বাদ দিয়ে রেকটির সমস্ত সম্পত্তি ভোগ সফল করতে বলেন। তিনি আরোও বলেন যে, এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও আদালতের মাধ্যমে বিরোধীয় বিষয়ে নিষ্পত্তির জন্য বলেন। আমরা উভয় পক্ষ তাহার নির্দেশনায় সম্মত হই এবং রুম থেকে বের হয়ে চলে যাই। অফিসার ইনচ লে মহোদয়ের রুম থেকে বের হওয়ার সময় তিনি আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, তাহার নাম ব্যবহার করে কেউ যেন টাকা পয়সা না নিতে পারে বা কাউকে না দেই। কিন্তু আমরা মহোদয়ের নিকট আসার পূর্বেই আসামীকে ৩,৪৫,০০০/- (তিন লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার) টাকা দিয়ে দেই। ঘোনার বিরোধীয় পক্ষ বিভিন্ন সময়ে জমি দখলে চেষ্টা করিলে প্রতিবারই পুলিশের সহযোগিতা চাই। প্রতিবারই পুলিশ আসে এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে। তারপরও কৈলাশের ঘোনার লোকজন পেশী শক্তি বলে আমাদের খাল দখলে নেয়। পরবর্তীতে আমরা নাকি? তোমরা তোমদের লোকজন নিয়ে দখল কর পুলিশ তোমাদের পাশে থাকবে। আসামীর নিকট আমাদের দেওয়া। কমিটির লোকজন নিশ্চত হই যে আসামী আমাদের সরলতার সুযোগে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে ৩,৪৫,০০০/- (তিন লক্ষ পঁয়তাল্লিশ হাজার) টাকা আত্মসাৎ করিয়া অপরাধ মূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করিয়াছে।
এবিষয় জানতে অভিযুক্ত হাচান আলীর মুঠোফোনের একাধিক বার কল দিয়ে ফোন রিচিভ না করাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম কবির এজাহারে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,এজাহারে অভিযুক্ত হাসান আলীকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা হাসান আলীর বিরুদ্ধে দলের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করার বিষয়ে জানতে চাইলে ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ বলেন, তার বিষয়ে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাকে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এনেছে তারাই দায়ী বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার প্রতারণার বিষয় নিয়ে উর্ধ্বতন নেতাদের সাথে আলাপ করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।