হাটহাজারী উপজেলা সরকারি হাসপাতালে সাংবাদিক প্রবেশ করলে তার গলায় কার্ড ঝুলাতে হবে। এমনটি জানালেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) রশ্মি চাকমা।
শনিবার স্যানিটারী ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে কিছু অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবেদককে এসব কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মিটিংয়ে একথা জানিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
শনিবার দুপুরে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে শারীরিক পরীক্ষা ছাড়া স্বাস্থ্য সনদ দেয়া ও অভিযানের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন দোকানির কাছ থেকে চুক্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগের বিষয়ে ইউএইচএফপিও রশ্মি চাকমার কার্যালয়ে তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে উল্টো প্রশ্ন করেন সাবেক স্যানিটারী ইন্সপেক্টর অনেক দুর্নীতি করেছেন তার বিরুদ্ধে নিউজ না করার কারণ জানতে চান।
হাটহাজারীতে যোগদানের পর পর বেনামে অনেক অভিযোগ আসে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাকে বদলি করা হয়। কোন সাংবাদিক কেন নিউজ করেনি। তার পরিবর্তে যোগদান করা ব্যক্তির পেছনে কেন? সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেনামে অভিযোগ হলে বেনামে অভিযোগকারীর সাথে কিভাবে যোগাযোগ করে সত্যতা পেলেন প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আপনাকে কেন উত্তর দিব আপনি যে সাংবাদিক তার প্রমান কি। আপনার গলায় কার্ড ঝুলতে দেখছিনা। সিএস স্যার মিটিংয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সাংবাদিক পরিচয় দিলে গলায় কার্ড ঝুলতে হবে। এসময় প্রতিবেদকের জাতীয় পত্রিকা যায়যায়দিনের একটি ভিজিটিং কার্ড দিলেও তা মানতে নারাজ। পরে উপস্থিত এক সংবাদকর্মী মোঃ শোয়েব, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী এবং ওই দপ্তরের টিএলসি শরীফ উদ্দিনের সামনে প্রতিবেদককে বলেন, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর দোকানে দোকানে ঘুরতে পারবেন। বিশেষ কিছু বিষয় ছাড়া সনদ দিতে পারবেন। এসময় টিএলসি শরীফ উদ্দিন বলেন, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর দোকানদারদের বিরুদ্ধে মামলাও ঠুকে দিতে পারবেন। স্বাস্থ্য সনদ এনে দেয়ার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার বিষয়ে জানতে চাইলে কোন উত্তর দেননি।
এদিকে রশ্মি চাকমা শুরুতে রুমে সাংবাদিকদের বসে থাকতে দেখেই বলেন, আপনারা না বলে আসেন। আমার মিটিং আছে বেরিয়ে যাব। এর আগে বৃহস্পতিবার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ওমর ফারুক তার কার্যালয়ে বলেন, দোকানদারদের সুবিধার্তে তাদের সাথে চুক্তি করা হয়। নির্ধারিত ফি ছাড়া বাড়তি টাকা যাতায়াত খরচ। তবে এটা নিয়ম বহির্ভূত বলেও স্বীকার করেন। এছাড়া যোগদানের পর পর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বড়দিঘিরপাড় চট্টগ্রাম-নাজিরহাট সড়কের পশ্চিমে খাবার হোটেলে গিয়েছেন বলেও স্বীকার করেন যা তার আওতাধীন নয়। তবে কোন টাকা চাওয়া হয়নি বলে জানান।
বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পূর্বের কর্মস্থল সন্দ্বীপে থাকাকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ভ্রাম্যমান আদালতের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছিল স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। গেল নভেম্বরে হাটহাজারীতে যোগদান করলেও সিভিল সার্জন অফিস ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে ছিলেন। সম্প্রতি নিজ কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন করতেই পূর্বের স্বভাবে ফিরে গেছেন বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
এদিকে হাসপাতাল নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম, দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করায় হাটহাজারীতে যোগদানের পর থেকেই প্রতিবেদকের উপর ক্ষিপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রশ্মি চাকমা। প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে উপরে কমপ্লিন করবেন বলেও হুমকি প্রদান করেন তিনি।